মিরু হাসান বাপ্পী,বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: ‘মা তুমি আবার এসো’ ভক্ত কণ্ঠের এই আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে বিদায় হলো দুর্গতি নাশিনী দুর্গা। শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের শেষ দিনে মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অতপর দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ।

গত সোমবার বোধনে অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে মর্ত্যে। হিন্দু বিশ্বাসে-টানা পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। এক বছর পর নতুন শরতে আবার তিনি আসবেন ‘পিতৃগৃহে’।

এবার ঘটকে আসা দেবী ফিরেছেন দোলায়। হিন্দুদের বিশ্বাসে, ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় ‘আনন্দময়ীর’ নিদ্রাভঙ্গের বন্দনায় যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল, দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনে তার সাঙ্গ হল আজ শুক্রবার।

বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে করতোয়া নদীতে এসপি ব্রিজ ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে বিজয়া শোভাযাত্রা হয়নি।

বিজয়াতে মণ্ডপে মণ্ডপে নামে ভক্তদের ঢল। ঢাক আর শঙ্খধ্বনি। ঢাকের বাদ্য, সিঁদুর খেলা। মুখরিত মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। একদিকে বিদায়ের সুর। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সকল অপশক্তির বিনাশ হয়। প্রতিমা নিরঞ্জনে অংশ নিতে অপরাহ্ণে সাড়ে চারটার পর বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা ট্রাক ও ভ্যানে করে প্রতিমা নিয়ে  করতোয়া নদীর এসপি ব্রিজ, দত্তবাড়ি, ফুলবাড়ী নদী ঘাটে আসে। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়।

এদিকে বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘এবার পৌর এলাকায় ৭৪টি মন্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সবার সার্বিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপণ করছি।’